দেশের বেসরকারি ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পেলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। আজ বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ যোগদানের তারিখ থেকে তিন বছরের জন্য তাঁকে এ পদে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যানই হচ্ছে এমআরএর প্রধান পদ। পদাধিকারবলে সংস্থাটির চেয়ারম্যান হচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর।
সংস্থাটির আগের নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফসিউল্লাহ গত সোমবার পদত্যাগ করেন। ২০২০ সালের ২৪ ডিসেম্বর আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ তিন বছরের জন্য ফসিউল্লাহকে সংস্থাটির নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয়। পরে তাঁর মেয়াদ আবার বাড়ানো হয়, এখনো যা শেষ হয়নি।
এমআরএর নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এত দিন সাবেক আমলাদের নিয়োগ দিয়েছে। হেলাল উদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে এই প্রথম ব্যতিক্রম ঘটল। এর মধ্য দিয়ে দেশের একজন গবেষককে নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে পেল এমআরএ।
এমআরএ সূত্রে জানা যায়, দেশে ক্ষুদ্রঋণের পরিমাণ পৌনে তিন লাখ কোটি টাকা। এমআরএ থেকে সনদ নিয়ে কাজ করছে ৭২৪টি প্রতিষ্ঠান। ক্ষুদ্রঋণের ৪ কোটি ১৯ লাখ গ্রাহক ও সদস্য রয়েছেন, যাঁর মধ্যে নারী সদস্যই ৩ কোটি ১৯ লাখ।
ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
দেশের ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম দেখভালে বহু বছর নিয়ন্ত্রক সংস্থা ছিল না। প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই ২০০৬ সালে গঠিত হয় মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ)। এ সংস্থার সনদ ছাড়া বর্তমানে কেউ ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম চালাতে পারেন না।
ব্র্যাক, আশা, ব্যুরো বাংলাদেশ, টিএমএসএস, এসএসএস, সাজেদা ফাউন্ডেশন, উদ্দীপন, জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন, পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন, শক্তি ফাউন্ডেশন—এগুলো দেশের শীর্ষ ১০টি ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান।
বিশেষ আইনে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক একটি ব্যাংক হলেও ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমও পরিচালনা করে ব্যাংকটি। এমআরএর ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্য ১ কোটি ৩ লাখ ৬০ হাজার জন। এর মধ্যে ৭১ লাখ ৬০ হাজার ঋণগ্রহীতা সদস্য ঋণ নিয়েছেন ২৪ হাজার ৭৫৭ কোটি টাকা।
ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে কাজ করা গবেষক অধ্যাপক এম এ বাকী খলীলীর মতে, মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ক্ষুদ্রঋণ খাতের অবদান ১২ থেকে ১৩ শতাংশ। গ্রামীণ অর্থনীতিতে এ খাতের অবদান ১৫ থেকে ১৮ শতাংশ।