ত্রিমাত্রিক প্রদর্শনীতে জীবন্ত হয়ে উঠলেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা!
কিংবদন্তি অন্যলোকে পাড়ি জমিয়েছেন প্রায় চার বছর আগে। তবু কীভাবে জীবন্ত? স্পেনের বার্সেলোনা শহরে ম্যারাডোনার জীবন নিয়ে ত্রিমাত্রিক প্রদর্শনী চলছে। সেখানে ম্যারাডোনার হলোগ্রাম (চেহারার অবয়ব) এবং শৈশবে যে বাড়িতে তিনি বেড়ে উঠেছেন, সেই বাড়িটির সেই সময়ের অবস্থা দৃশ্যায়ন করে দেখানো হয়। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, এই প্রদর্শনীতে জীবন্ত হয়ে ওঠেন ’৮৬ বিশ্বকাপজয়ী এ আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি।
আরও পড়ুন
বেলিংহাম বা সাকা নন, ইংল্যান্ডের বর্ষসেরা পালমার
বার্সেলোনায় আসার আগে ইতালির নেপলস ও ইসরায়েলের তেল আবিবে চলেছে ‘ডিয়েগো লিভস’ নামের এই প্রদর্শনী। আগামী দুই মাস বার্সেলোনা শহরে এই প্রদর্শনী চলবে। এই শহরেরই ক্লাব বার্সেলোনায় ১৯৮২ থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত দুই মৌসুম খেলেছেন ম্যারাডোনা। কোপা দেল রে ও কোপা দে লা লিগা জিতলেও কাতালান ক্লাবটিতে সময়টা তাঁর খুব ভালো কাটেনি। ইনজুরিতে পড়েছেন আর মানসিকভাবেও সুখে ছিলেন না।
বার্সেলোনা শহরের মধ্যভাগে ২ হাজার বর্গমিটার জায়গাজুড়ে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে বোকা জুনিয়র্সের জার্সি পরা ম্যারাডোনাকে হলোগ্রামে দেখানো হয়। ভালোবাসার এ ক্লাবের হয়ে একবারই আর্জেন্টিনার শীর্ষ লিগ জিতেছেন সর্বকালের অন্যতম সেরা এ ফুটবলার।
ম্যারাডোনার সেই ‘হ্যান্ড অব গড’ গোলের অনুকরণে গোল করার সুযোগও রাখা হয়েছে দর্শনার্থীদের জন্যএএফপি
এই প্রদর্শনীতে ভক্তরা চাইলে ম্যারাডোনার মতো করে পেনাল্টি কিক নিতে পারবেন। কিংবা ১৯৮৬ মেক্সিকো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাঁর সেই বিখ্যাত ও বিতর্কিত ‘হ্যান্ড অব গড’ গোলের অনুকরণে ভক্তরা ছবিও তুলতে পারবেন। এই পথ-প্রদর্শনীর অন্যতম আয়োজক আভেলিনো তামারগো এএফপিকে বলেছেন, ‘এখানে মনে হবে ম্যারাডোনা আপনার পাশেই দাঁড়িয়ে। তাঁকে অনুভব করতেই এই আয়োজন।’
আরও পড়ুন
বিশ্রামের ফাঁকে ফাঁকে খেলাটাই এখন মেসির নিয়তি
এই আয়োজনের পেছনে ম্যারাডোনার আত্মীয়-স্বজনদেরও সম্মতি আছে। দীর্ঘদিন কোকেন ও মদ্যপানে আসক্ত ম্যারাডোনা মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের পর ২০২০ সালের নভেম্বরে ৬০ বছর বয়সে মারা যান। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর বুয়েনস এইরেসে একটি বাসা ভাড়া করে ম্যারাডোনাকে সেখানে রাখা হয়েছিল। অস্ত্রোপচারের দুই সপ্তাহ পর ম্যারাডোনাকে তাঁর বিছানায় মৃত পাওয়া যায়। হার্ট অ্যাটাকে মারা যান কিংবদন্তি।
ত্রিমাত্রিক ভিডিওতে ম্যারাডোনার জীবনের গল্পও দেখেন দর্শনার্থীরাএএফপি
প্রদর্শনীতে ম্যারাডোনার জীবনের কিছু ছবিও দেখানো হয়। ত্রিমাত্রিক ভিডিওতে দেখানো হয় তাঁর জীবনের গল্প এবং বুয়েনস এইরেসের ভিলা ফিওরিতোয় যে বাসায় বেড়ে উঠেছেন ম্যারাডোনা, সেই বাড়িটির সেই সময়ের অবস্থা দৃশ্যায়ন করে দেখানো হয়। তামারগো বলেছেন, ‘ম্যারাডোনা আমার শৈশবের নায়ক। আমাদের প্রজন্মের নায়ক।’
অক্টোবরের শুরুতে আর্জেন্টিনার একটি আদালত ম্যারাডোনার দেহাবশেষ কবরস্থান থেকে সরানোর অনুমতি দেন। আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এইরেসের কেন্দ্রস্থলে ’৮৬ বিশ্বকাপ কিংবদন্তির জন্য সমাধিস্তম্ভ বানিয়ে তাঁর দেহাবশেষ সেখানে স্থানান্তর করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ম্যারাডোনার কন্যাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।